‘নবীর শিক্ষা তাই ভিক্ষা করি না। আমি অন্ধ লোক, চোখে দেখি না। ১০-২০ টাকার বাদাম ভাজা নেন গো আল্লাহর বান্দারা। মা-বোনেরা এগিয়ে আসেন আমার কাছে থেকে বাদাম ভাজা নেন। আমার ডালভাতের ব্যবস্থা করে দেন, আমি অন্ধ লোক।’
এভাবেই ৫০ বছরের জন্মান্ধ সাদেক আলী জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে বাদাম বিক্রি করেন। তিনি কুষ্টিয়ার প্রাগপুর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মুসলিম নগর বাঁধের বাজার এলাকার নূর ইসলামের ছেলে। প্রায় ২২ বছর ধরে বিভিন্ন জায়গায় বাদাম বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। প্রতিবন্ধকতা তাকে চার দেয়ালের মাঝে আটকে রাখতে পারেনি। স্ত্রী আর দুই মেয়ে সন্তানকে নিয়ে একটু সুখে থাকার আশায় রোজ বাদামের বস্তা মাথায় নিয়ে পথে পথে ঘুরে বিক্রি করেন। অন্য অনেক প্রতিবন্ধীর মতো ভিক্ষাবৃত্তি না করে বাদাম বিক্রিকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন তিনি।
স্থানীয়রা বলেন, সাদেক আলী জন্ম থেকে অন্ধ। বহু বছর ধরে সে বাদাম বিক্রি করে বেড়াই। অন্ধ ও গরিব মানুষ হলেও সে কোনোদিন ভিক্ষা করেনি। বাদাম বিক্রি করে তাদের সংসার ভালোই চলে। সে ভিক্ষা না করে বা বাড়িতে বসে না থেকে বাদাম বিক্রি করে এতে গ্রামের মানুষ তার প্রতি সন্তুষ্ট।
শ্যামপুর গ্রামের বাদাম ক্রেতা সাব্বির আহমেদ বলেন, পথের মাঝে অন্ধ বাদাম বিক্রেতার কাছে বাদাম কিনলাম। তার বাদাম অনেক ভালো। তিনি বাদামের বস্তা মাথায় নিয়ে বাদাম বিক্রি করে বেড়াচ্ছেন। অনেক অন্ধ প্রতিবন্ধী মানুষ ভিক্ষা করে। সাদেক আলী অন্ধ হয়েও বাদাম বিক্রি করে। সমাজের অন্যান্য ভিক্ষুকদের তার কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান মুকুল বলেন, সাদেক আলী জন্ম থেকে অন্ধ মানুষ। সে বহুবছর ধরে বাদাম বিক্রি করে বেড়ায়। বাদাম বিক্রি করে যে অর্থ আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে। সে প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। ভিক্ষা না করে, ঘরে বসে না থেকে সে কর্ম করে জীবিকানির্বাহ করে এতে এলাকার মানুষ তার প্রতি খুশি।