ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। ক্র্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম লাবলু ও সদস্য আল-আমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এ হুঁশিয়ারি দেন।
সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) উদ্যোগে ক্র্যাব কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সভাপতি আবুল খায়েরের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি আবু সালেহ আকন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক যুগ্ম মহাসচিব অমিয় ঘটক পুলক, ক্র্যাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক আল হাদী, ডিআরইউর সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, ডিইউজের সাবেক জনকল্যাণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, ক্র্যাবের নির্বাহী সদস্য রুদ্র মিজান, সারা বাংলাডটনেটের সিনিয়র করোসপন্ডেন্ট উজ্জল জিসান প্রমুখ।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বহিষ্কৃত মহিলা যুবলীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার অপকর্ম নিয়ে মানবজমিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কোন সংসদ সদস্যের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবুও এমপি আসাদুজ্জামান শিখর বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় ডিজিজাল নিরাপত্তা আইনে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও প্রতিবেদক আল-আমিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এতে শিখর নিজেই প্রমাণ করেছেন যে, এই অপকর্মে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। নতুবা যে সংবাদে তার নাম উল্লেখ করা হয়নি সেই সংবাদে তিনি ক্ষুব্ধ হবেন কেন? বিষয়টি ‘ঠাকুর ঘরে কেরে, আমি কলা খাই না’ এরকম।
বক্তারা বলেন, একইভাবে বিতর্কিত এই আইনটি ব্যবহার করে ক্র্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম লাবলুর বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় মামলা করেছেন এক ব্যক্তি। এছাড়াও এমপি শিখরের মামলার আসামি আলোকচিত্রী শফিকুল ইসলাম কাজল নিখোঁজ রয়েছেন।
কুড়িগ্রামে আরেক সাংবাদিককে রাতের আঁধারে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে মিথ্যা অভিযোগে সাজা দেয়া হয়েছে। শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। এসব ঘটনা প্রমাণ করে দেশের কোথাও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নেই।
অবিলম্বে সাংবাদিকদের ওপর দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্র্যাবের দুই সদস্যসহ সাংবাদিকদের ওপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, একজন সংসদ সদস্য আমাদের এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অথচ সংবাদে তার নাম প্রকাশিত হয়নি। তাহলে এটি কীভাবে মানহানি হলো? বরং তিনি যে মামলা করেছেন তার নামেই উল্টো মানহানির মামলা দায়ের করা যায়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকবান্ধব। অবলিম্বে এই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নইলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।