মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, মধ্যমপন্থা ও সহনশীলতা প্রসারে মক্কায় দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ‘যোগাযোগ ও সংহতি’ শীর্ষক ইসলামি কনফারেন্সের আয়োজন করেছে সৌদি আরবের ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রণলায়।
রোববার (১৩ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে বিশ্বের ৮৫ দেশ থেকে ১৫০ জন আলেম, মুফতি ও ইসলামি গবেষক অংশগ্রহণ করেছেন।
সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছেন কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ শিক্ষা অথরিটি আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার সভাপতি মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান।
আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে আল্লামা মাহমূদুল হাসান ৭টি প্রস্তাবনা পেশ করেন। তার প্রস্তাবনাগুলো হলো-
১. বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দেশ, জাতি ও ইসলামের জন্য ওলামা-মাশায়েখদের যে আত্মত্যাগ ও কোরবানি রয়েছে, তা মূল্যায়ন করে আরবি ও ইংরেজি ভাষায় একটি বিশ্বকোষ সংকলন করা।
২. চার মাজহাবের ইমামদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সৌদি সরকারের সুস্পষ্ট বার্তা প্রচার করা। প্রাচ্যবিদ ও তাদের এজেন্টদের পক্ষ থেকে ইমামরদের ব্যাপারে যে অপপ্রচার ও অপবাদ আরোপ করা হয়, চূড়ান্তভাবে তা খণ্ডন করা এবং নির্ভরযোগ্য চার মাজহাবের বিরুদ্ধে সব ধরনের তর্ক-বিতর্ক নিরসনে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
কারণ, অনুসরণীয় ইমামদের অসম্মানের প্রবণতা এক শ্রেণীর মধ্যে ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে, যা উম্মাহর শরীরকে ক্ষত-বিক্ষত করে দিচ্ছে এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতির পরিবেশকে কলুষিত করছে।
৩. সমাজে নাস্তিকতা ও ধর্মহীনতার প্রচার-প্রসার ঘটায়—এমন সব প্রোগ্রাম, টকশো টেলিভিশন ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ায় প্রচার বন্ধ করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৪. সৌদি আরবে প্রতি বছর ‘যোগাযোগ ও সংহতি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করা এবং বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে স্থানীয় সম্মেলনের ব্যবস্থা করা।
৫. উম্মতে মুহাম্মাদীর অন্যতম বৈশিষ্ট হচ্ছে মধ্যমপন্থা। এ চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সকল মুসলিম রাষ্ট্রে সেমিনারের ব্যবস্থা করা।
৬. বাংলাদেশে কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য সৌদি সরকারের অর্থায়নে আল-হাইয়াতুল উলয়া লিল-জামিয়াতিল কওমিয়ার অধীনে একটি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।
৭.বাংলাদেশের সরকার কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাষ্টার্স সমমানের যে স্বীকৃতি দিয়েছে, তা মূল্যায়ন করে সৌদির ভার্সিটিগুলোতে কওমি ছাত্রদের সরাসরি ভর্তির সুযোগপ্রদানে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা।