রাজধানীর বনশ্রীর এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। হোসাইন আল মাসুম নামে ওই ব্যবসায়ী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন ভূইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সোমবার আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন, মো. শামিম রহমান, ইফতেখার উদ্দিন টুটুল, তাপসী, অপু, রিমা, হান্নান ও বাবু। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৩০ মে রাত এগারোটার দিকে তার ঢাকার বাসার কাছে ফরায়েজী হাসপাতাল থেকে তিনি তার স্ত্রীর (তৎকালীন সময়ে সন্তান সম্ভবা) কিছু মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে তার সঙ্গে শামিম রহমানের দেখা হয়। এরপর সেখানে তাপসী নামের এক তরুণী আসে যাকে শামিম তার বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেয়। কথাবার্তার একপর্যায়ে তিনি দুজনের কাছ থেকে বাসার উদ্দেশে পা বাড়ায়। অল্প কিছুদূর এগোতেই একটি নিশান এক্সট্রেইল এবং টয়োটা এক্স করোল্লা গাড়ি তার পথরোধ করে।
গাড়িগুলোর একটি থেকে বেড়িয়ে প্রথমে শামিম তার সামনে আসে। এরপর শামিমের নেতৃত্বে তাপসী, অপু, রিমা, হান্নান ও বাবুসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন তাকে অস্ত্রের মুখে জোরপূর্বক অপহরণ করে। তারা তাকে অস্ত্রের মুখে গাড়িতে ওঠায় এবং চিৎকার করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর তার চোখ ও মুখ বেঁধে ফেলা হয়। তারপর তাকে শামিমের নিকেতনের অফিসের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মামলার দুই নম্বর আসামি ইফতেখার উদ্দিন টুটুল তার মাথায় পিস্তল ঠেকায় এবং এই সুযোগে আসামি তাপসি তার দেড় লাখ টাকা মূল্যের আইফোন ও নগদ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে নেয়। এসময় তাকে বেধরক মারধর করা হয়।
এর কিছুক্ষণ পর শামিম তার কাছে এক কোটি টাকা দাবি করে। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তাকে আবারও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এবং জীবনের ভয়ে তাদের কথায় রাজী হন মাসুম। এরইমধ্যে তারা কতগুলো খালি স্ট্যাম্প এবং সাদা কাগজে সই করিয়ে নেয়। এরপর তাকে ফোন হাতে দিয়ে টাকার ব্যবস্থা করতে বলে। তখন তিনি টাকার বিষয়ে তার পরিচিত বড় ভাই মো. ফরহাদ রেজাকে জানান। সে অনুযায়ী তিনি পরদিন ৩১ মে সকালে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে শামিমের অ্যাকাউন্টে ৫ লাখ টাকা পাঠান। কিন্তু তারা আরও টাকার জন্য তাকে চাপ দিতে থাকে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, এরইমধ্যে তার স্ত্রী তাকে নানান জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ৩১ তারিখেই খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এ বিষয়টি টের পেয়ে শামিম, টুটুল এবং তাদের লোকেরা মাসুমকে নিকেতন থেকে মুন্সিগঞ্জ নিয়ে যায়। সেখানে তাকে অনেক মারধর করা হয়। এরপর মাসুমকে ২ জুন হাতিরঝিল থানায় এনে একটি বানোয়াট প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার করিয়ে দেন। এ মামলায় তিনি এক মাসের বেশি জেল খেটে গত ৪ জুলাই বের হন।